ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫

৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ সফর ১৪৪৭

উপকূলীয় পরিত্যক্ত জমিতে সাম্মাম চাষ, স্বপ্ন পূরণ কৃষকের

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১:৩৭, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ২১:৩৭, ১৬ আগস্ট ২০২৫

উপকূলীয় পরিত্যক্ত জমিতে সাম্মাম চাষ, স্বপ্ন পূরণ কৃষকের

পটুয়াখালী জেলার উপকূলীয় উপজেলা রাঙ্গাবালীতে মধ্যপ্রাচ্যের রসালো ফল সাম্মাম চাষে নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। তারা সাম্মামের ফলনে ব্যাপক আনন্দ প্রকাশ করছেন। চাষিদের আশা, ফলন ভালো হয়েছে এবার দামটাও ভালো পাবেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাঙ্গাবালী উপজেলার বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের মোল্লার চর গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ২০২১ সালে শুরু হওয়া সাম্মাম চাষে মিলছে অভাবনীয় সাফল্য। একসময় যে জমি পানির নিচে থাকত, হতো না কোনো ফসল, আজ সেখানে এই নতুন ফসল নিয়ে এখন কৃষকেরা স্বপ্ন বুনছেন।

সাম্মাম চাষী স্থানীয় কৃষক মো. আলী আক্কাস মোল্লা (৫০) জানান, আমি এই প্রথম ৩৫ শতাংশ জমিতে সাম্মাম চাষ করেছি। আমার এই চাষের সবটুকু জমি আগে পরিত্যক্ত ছিল। কোনো ফসল হতো না। এখন আল্লাহর রহমতে সাম্মাম চাষ করে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। আশা করি, আবহাওয়া ভালো থাকলে অনেক লাভবান হব।

একই এলাকার আরেক কৃষক মো. তোফায়েল মৃধা (৪৮) বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার সাম্মামের ফলন অনেক ভালো। দামও মোটামুটি ভালো। আমরা পাকা সাম্মাম ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে এবং গোলা সাম্মাম ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এখন আমি পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোভাবে দিনযাপন করতে পারছি।

তিনি আরো জানান, এই সাম্মাম মরু এলাকার ফল। তাই আমাদের এলাকায় আগে এই ফলের নাম কেউ জানত না। এখন অনেকে সাম্মাম চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ফলন ও দামে লাভজনক হওয়ায় আমরা এই ফল চাষে আরও আগ্রহী। প্রতি বছর আমরা এই ফল চাষাবাদ করবো, ইনশাল্লাহ।

তবে আক্ষেপের কথাও জানান তারা। বলেন,  সরকারিভাবে তারা এখনো কোনো সহযোগিতা পাননি। প্রশিক্ষণ, বীজ, সার, কীটনাশক কিংবা বাজারজাতকরণ বিষয়ে তাদের দেওয়া হয়নি কোনো দিকনির্দেশনা। উপজেলা কিংবা জেলা কৃষি অফিসও তাদের এ বিষয়ে সহায়তা করছেন না।

কৃষকদের চাওয়া, যদি সাম্মাম চাষে সরকারিভাবে সহায়তা, প্রযুক্তি ও পরামর্শ দেওয়া হয়, তাহলে উপকূলীয় এই অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, রাঙ্গাবালীর চর এলাকায় সাম্মাম চাষ হতে পারে অর্থনৈতিক মুক্তির একটি বড় দিক। তাই সরকারের কাছে এই চরবাসী কৃষকদের আবেদন যেন বিবেচনায় নেয়া হয়।

এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, স্মলহোল্ডার এগ্রিকালচার কম্পিটিটিভনেস প্রকল্পের আওতায় ২০২১-সালে প্রথমবারের মত উপজেলায় অফ-সিজন সাম্মাম চাষাবাদ হয়। চলতি মৌসুমে উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়নে প্রায় ১২ হেক্টর জমিতে সাম্মাম আবাদ আছে। পরবর্তী বছরে উপজেলার ছোটবাইশদিয়া ও বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নে অফ-সিজন সাম্মাম চাষ শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের অর্থায়নে যতটুকু সহযোগিতা করার তা আমরা করে যাচ্ছি। এছাড়াও প্রশিক্ষণ ও উচ্চমূল্য ফসল চাষবিষয়ক কৃষকদের ধারণা দেওয়া হয়। এছাড়া রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় ও ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা অফসিজন সাম্মাম চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

সূত্র: বাসস

এএ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

আরও পড়ুন