ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫

৬ ভাদ্র ১৪৩২, ২৭ সফর ১৪৪৭

গেল অর্থবছরে রেকর্ড ৯৩৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন বিমানের

ব্যাংকার প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৮:২০, ১৮ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৮:২৬, ১৮ আগস্ট ২০২৫

গেল অর্থবছরে রেকর্ড ৯৩৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন বিমানের

বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৩৭ কোটি টাকা অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জন করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এই মুনাফার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরের ইতিহাসে এক অনন্য রেকর্ড গড়েছে বিমান।

সোমবার (১৮ আগস্ট) কোম্পানির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিগত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের আগে বিমানের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জিত হয় ২০২১-২২ অর্থবছরে, যার পরিমাণ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।

বিমান এই আর্থিক সাফল্যের জন্য যাত্রী ও গ্রাহকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, তাদের আস্থা ও সমর্থনই এই রেকর্ড মুনাফা অর্জনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে।

সংস্থাটি মনে করছে, এই সাফল্য এসেছে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নের ফল হিসেবে।

রাষ্ট্রায়ত্ত পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সটি জানিয়েছে, ১৯৭২ সালে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় দিয়ে যাত্রা করা বিমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের সীমিত অবকাঠামো ও সম্পদের মধ্যে ধীরে ধীরে আধুনিক ও প্রতিযোগিতামূলক এয়ারলাইন্সে পরিণত হয়েছে।

বিমানের হিসাব অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরে ১১,৬৩১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আয় হয়েছে কোম্পানির। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিমান প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটির বেশি আয় করা কোম্পানিতে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৫৫ বছরের যাত্রায় বিমান সবমিলিয়ে ২৬ বছর লাভের মুখ দেখেছে, জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরের পর গত ১৮ বছরে বিমানের পুঞ্জীভূত মোট মুনাফা হয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকা।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের বহরে ২১টি উড়োজাহাজ ছিল, যার মধ্যে বর্তমানে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন। এর মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক ও জ্বালানি-সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার। বিমান কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, কোম্পানির আরেকটি বড় শক্তি হলো নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা। লাইন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে বড় ধরনের পরীক্ষা (চেক) পর্যন্ত সবই দেশে সম্পন্ন করা হয়, যা বিপুল ব্যয় সাশ্রয় করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমান ৩৪ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে, কার্গো পরিবহন হয়েছে ৪৩,৯১৮ টন এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকেট বিক্রির নজিরও তৈরি হয়।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ. বি. এম. রওশন কবীর জানিয়েছেন, বিমানের লক্ষ্য হলো জাতীয় গৌরবকে ধারণ করে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা এবং যাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দক্ষিণ এশিয়ার একটি শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়া।

রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিটির ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে— নতুন জনপ্রিয় গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, যাত্রীসেবা ও পরিচালনায় ডিজিটাল রূপান্তর এবং কার্গো সেবা শক্তিশালীকরণ। সেবা, নির্ভরযোগ্যতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়া বিমানের লক্ষ্য।

এএ

ব্যাংকার প্রতিবেদন

আরও পড়ুন