ব্যাংকার প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০:৩৪, ২৭ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১০:৪২, ২৭ জুন ২০২৫
মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে সরকার। এই বোর্ডে চেয়ারম্যান করা হয়েছে অধ্যাপক ড. নিয়াজ আসাদুল্লাহকে। পাশাপাশি নগদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুতাসিম বিল্লাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মনিরা আক্তার। প্রজ্ঞাপনটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন- ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যুগ্ম সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্টের পরিচালক, ব্যাংকিং রেগুলেটরি অ্যান্ড পলিসি ডিপার্টমেন্টের পরিচালক, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) পরিচালক খন্দকার সাব্বির মোহাম্মদ কবির, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার তানিম হোসাইন শাওন, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম বাররু সানি।
নতুন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নিয়াজ আসাদুল্লাহ মালয়েশিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক। পাশাপাশি তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসরিয়াল ফেলো।
গত বছরের ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক বসানোর পর নিরীক্ষায় উঠে আসে, নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না। প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। সবার চোখের সামনে এসব অনিয়ম হয়।
এ ঘটনায় সরকারের ডাক বিভাগের আটজন সাবেক ও বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি), নগদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর মধ্যে ‘নগদ’ পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগ নিয়ে করা রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে তা খারিজ করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিলেন, তা পরে স্থগিত হয়ে যায়। এই রায় গত ৭ মে বের হয়। সেদিনই নগদের দায়িত্ব নেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংক ও ডাক বিভাগের কর্মকর্তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। নগদের কর্মকর্তারা নিজেরাই সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলার আসামি মো. সাফায়েত আলমকে নতুন সিইও হিসেবে নিয়োগ দেন।
পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ২১ আগস্টের প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত স্থগিতাদেশ আংশিক প্রত্যাহারের আবেদন করে, যা আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। গত ২ জুন আপিল বিভাগ নগদে প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিতের আদেশ স্থগিত করে রায় দেন। ফলে নগদে নতুন বোর্ড গঠন এবং সিইও নিয়োগের পথ সুগম হয়।
নতুন সিইও ও পরিচালনা পর্ষদের অধীন নগদ আরও কার্যকর ও জনমুখী সেবা নিশ্চিত করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
এএ
ব্যাংকার প্রতিবেদন