ব্যাংকার প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৬:৫৮, ২৬ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৬:৫৮, ২৬ জুলাই ২০২৫
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণেই কর প্রশাসনে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজতর হচ্ছে। যে পরিমাণ কর আদায় হয় তার চেয়ে বেশি কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমরা কর আইনগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। এতে সরকার চাইলেই আর কর অব্যাহতি দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থে শুধুমাত্র সংসদ অর্থ বিলের মাধ্যমে কর অব্যাহতির বিষয় বিবেচনা করতে পারবে।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
‘কর ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের মাধ্যমেই প্রত্যাশিত রাজস্ব আহরণ সম্ভব’ শীর্ষক এই ছায়া সংসদের আয়োজন করা হয়।
আবদুর রহমান খান বলেন, আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ওভার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারাটা আমাদের সমন্বিত ব্যর্থতা। বর্তমান যুগে পণ্যের দাম পৃথিবীর কোন প্রান্তে কত তা বোতাম টিপলেই জানা যায়। ঋণপত্র খোলার সময় ব্যাংকগুলো এবং কাস্টমস এ বিষয়টি পরীক্ষা ও যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে দাম সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে। যদি প্রকৃত মূল্যে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা না হয়, তাহলে কমপ্লায়েন্ট প্রতিষ্ঠান ও প্রকৃত করদাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তিনি বলেন, কর ব্যবস্থায় বড় বাধা দুর্নীতি। জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কর ব্যবস্থায় দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব। বাংলাদেশে কোন কর শিক্ষা নেই। কেবল উচ্চ শিক্ষায় দু'একটি বিষয়ে কর শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত আছে। কর শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রে কর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এনবিআরকে বিলুপ্ত করে করনীতি ও কর ব্যবস্থাপনা আলাদা দুটি বিভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা নিয়ে আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদ বন্ধ করায় ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যৌক্তিক দাবি সরকার বিবেচনায় নেবে। যদিও এনবিআর বিভক্ত হলে প্রশাসন ক্যাডারের আধিপত্য বাড়তে পারে এবং রাজস্ব ক্যাডারের কর্মকর্তারা উচ্চপদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বঞ্চিত হতে পারেন এমন আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিভাজনের প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম প্রকাশ করে সেই শঙ্কা দূর করা প্রয়োজন।
রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে কর প্রশাসনের দুর্বলতা দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পক্ষ থেকে সাতটি সুপারিশ করে। সুপারিশগুলো হচ্ছে– করজালের পরিধি বাড়িয়ে স্বচ্ছ ও উৎসাহব্যঞ্জক কর আদায়ের ব্যবস্থা এবং কর ব্যবস্থার পূর্ণ অটোমেশন করা; এনবিআর বিভাজন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আতঙ্ক দূর করতে স্পষ্ট ধারণা প্রদান; বিভাজনের ফলে যাতে রাজস্ব ক্যাডারের কর্মকর্তারা উচ্চ পদে যেতে বঞ্চিত না হন তা নিশ্চিতকরণ; কেইস টু কেইস ভিত্তিতে কর অব্যাহতির সুযোগ বন্ধ; আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ করে প্রকৃত মূল্যে আমদানি নিশ্চিতকরণ; করভীতি দূর করে করবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং করের অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
ছায়া সংসদে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. শাকিলা জেসমিন, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা ও সাংবাদিক আবুল কাশেম।
প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
এএ
ব্যাংকার প্রতিবেদন