ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

কৃষি ব্যাংকে ঋণ নেওয়ার উপায়

দি ব্যাংকার ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪:৩৯, ৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৩৯, ৭ মে ২০২৫

কৃষি ব্যাংকে ঋণ নেওয়ার উপায়

গ্রামীন অর্থনীতিতে বিনিয়োগের পথ সুগম করতে কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালে। বিকেবি ব্যাংকিং কোম্পানি আইন-১৯৯১ এর অধীনে একটি ব্যাংকিং কোম্পানি হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শতভাগ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকটিতে কৃষি উদ্যোক্তাদের নানা সুবিধা দেওয়া হয়। এছাড়া কৃষি উদ্যোগের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় ঋণ সুবিধা। তবে এ বিষয়ে অনলাইনে তথ্য সহজলভ্য নয়। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিতে এ প্রতিবেদনটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

কৃষি ব্যাংকের প্রধান লক্ষ্য কৃষকদের সাহায্য করা। সেহেতু কৃষকরা আর্থিকভাবে সচ্ছল কিনা? কৃষকদের কোন কিছুর প্রয়োজন রয়েছে কিনা এটি কৃষি ব্যাংক নজর রাখেন। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেহেতু কৃষকদের কোন সমস্যা না হয় সেজন্য কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন মেয়াদের কৃষি লোন দিয়ে থাকে। 

কৃষি ব্যাংকে ঋণ নেওয়ার শর্ত

কৃষি ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী ঋণের জন্য আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক ও প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।

ঋণের আবেদনের সময় যে যে কাগজ লাগবে

বাংলাদেশের কৃষি ব্যাংক থেকে কৃষি কাজের জন্য লোন নিতে হলে বড় জামানত প্রয়োজন হয় না। তবে ঋণ প্রক্রিয়াকরণের জন্য কিছু কাগজ জমা দিতে হয়। কাগজগুলো আগে থেকেই প্রস্তুত রাখলে আপনার জন্যই সুবিধা। এ কাগজগুলো হলো :  

  • কৃষি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট বা হিসাব নম্বর থাকতে হবে। যদি না থাকে তাহলে খুলে নিতে হবে।
  • আবেদনকারী সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  • আবেদনকারীর পরিচয় পত্র যেমন ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি।
  • নমিনির ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি। 
  • নমিনের সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 
  • আবেদনকারীর মালিকানাধীন জমির পরিমাণের প্রমাণ হিসেবে জমির কাগজপত্র দিতে হবে। এর মধ্যে জমির খাজনার কাগজও দিতে হবে।
  • ঋণের জামিনদাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও ছবি ও ঠিকানা প্রদান করতে হবে। 
  • ঠিকানার প্রমাণপত্র হিসেবে পানি, বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাস বিলের কপি দিতে হবে।
  • ঋণ আবেদনকারীর সচল মোবাইল নাম্বার লাগবে। 
  • লোনের পরিমাণ বেশি হলে জামানত লাগবে। তবে কম পরিমাণের ঋণের জন্য জামানত লাগে না।
  • এছাড়া কৃষি ব্যাংকের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নিকট হতে যে আবেদন পত্রটি সংগ্রহ করা হয়েছে,অবশ্যই এটি সঠিকভাবে পূরণ করে এ সকল নথিপত্রের সাথে জমা দিতে হবে।

 

কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি

কৃষি ব্যাংক মূলত কৃষকদের বিনিয়োগ সহায়তা দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে কৃষকরা আর্থিকভাবে সাবলম্বী কি না এ বিষয়ে তাদের কঠোর মনোযোগ রাখতে হয়। কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষি ব্যাংক বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে।  

কৃষি ব্যাংকের ঋণ পেতে বেশ কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিম্নে ধাপ আকারে কৃষি ব্যাংক লোন পদ্ধতি উপস্থাপন করা হয়েছে:

  • আপনার নিকটস্থ কৃষি ব্যাংকের যে কোন শাখায় যোগাযোগ করুন। আপনাকে নিজ এলাকার শাখাতেই যেতে হবে।
  • কৃষি ব্যাংকের শাখায় দায়িত্বরত কর্মকতার সাথে ঋণ সম্পর্কে আলোচনা করে পরামর্শ নিতে পারবেন।
  • এবার আপনায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি ঋণ নিতে চাইলে কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। 
  • ব্যাংক কর্মকর্তা আপনাকে ঋণের আবেদনপত্র দেবেন। আবেদনপত্রে ব্যাংক কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য দেবেন।  
  • প্রয়োজনীয় সব দলিলপত্রের কপি সঙ্গে রাখতে হবে।
  • আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর ব্যাংক কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করবেন।
  • আবেদনের কাগজ ঠিক থাকলে আপনি দ্রুত ঋণ পাবেন।

 

কৃষি ব্যাংকে যেসব ক্ষেত্রে ঋণ পাওয়া যায়

বিশেষায়িত ব্যাংক হওয়ায় কৃষি ব্যাংক শুধু এ সংশ্লিষ্ট খাতেই অর্থায়ন করে। কৃষি ব্যাংক মৎস উদ্যোগ, শস্য ঋণ, গবাদিপশুর জন্য ঋণ এবং কৃষি সেচ ও যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ঋণ দিয়ে থাকে।

কৃষি ব্যাংকের সুদহার

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লোনের সুদহার মাত্র ৮ শতাংশ। অর্থাৎ কোন গ্রাহক যদি কৃষি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে ঋণের অর্থের উপর ৮ শতাংশ টাকা পরিশোধ করতে হবে। কোন গ্রাহক যদি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে এক লক্ষ টাকা কৃষি লোন নিয়ে থাকেন তাহলে তাকে বর্তমান ইন্টারেস্ট রেট অনুযায়ী এক লক্ষ আট হাজার টাকা সর্বমোটে পরিশোধ করতে হবে।  এ সুদহার বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় পরিবর্তন করতে পারে। তাই সুদহার সম্পরর্কে নিকটস্থ শাখায় কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করাই শ্রেয়।  

কৃষি ব্যাংকে ঋণ পাওয়ার শর্ত 

প্রতিটি ব্যাংকের থেকে লোন পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্তাবলী গ্রাহককে অনুসরণ করতে হয় এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই গ্রাহককে তাদের শর্তাবলী অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের এ সকল শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে: 

  • অবশ্যই আবেদনকারীকে কৃষি কাজের সাথে জড়িত থাকতে হবে। 
  • লোন গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য বা কারণ উল্লেখ করতে হবে। 
  • কৃষকরা লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ সুবিধা করতে পারবেন প্রত্যেক লোন গ্রহীতাকে একটি ক্রেডিট পাসবুকও দেওয়া হবে।

কৃষি ব্যাংক কত টাকা ঋণ দেয়? 

কৃষি ব্যাংক থেকে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে লোন গ্রহণ করতে পারবেন এক্ষেত্রে কৃষি ব্যাংক আপনার কৃষি জমির পরিধি জমির পরিমাণ অন্যান্য বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে বিভিন্ন পরিমাণ ঋণ দেয়। কৃষি ব্যাংক সাধারণত তিন ধরনের ঋণ দেয়। এগুলো হচ্ছে, স্বল্পমেয়াদি ঋণ, মধ্যমেয়াদি ঋণ ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ। এক্ষেত্রে টাকার পরিমাণের ওপর নির্ভর করে গ্রাহক ঋণ নিতে পারবেন। 

 

/আআ

আরও পড়ুন